রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩৯ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

চালের বাজারে অস্থিরতা

ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
মহামারি করোনায় এমনিতেই বিপর্যস্ত জনজীবন। সার্বিকভাবে মানুষের আয়ে ভাটা পড়েছে। চলমান লকডাউনে নতুন করে সংকটে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষ। এমন পরিস্থিতিতেও নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা থামছেই না। বিশেষ করে বছরজুড়েই চালের বাজার ছিল ঊর্ধ্বমুুখী। এই সংকটের মধ্যেই আবারো বেড়েছে চালের দাম। ব্যবসায়ীরা জানান, সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১ থেকে ২ টাকা করে বেড়েছে সরু ও মাঝারি চালের দাম। গত সপ্তাহে রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে মিনিকেট চাল মানভেদে বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৬৬ টাকায়।
এখন সেই চাল বিক্রি হচ্ছে ৬২ থেকে ৬৮ টাকায়। অথচ খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভরা মৌসুমে এই চালের দাম হওয়ার কথা ৫০-৫২ টাকা। অন্যদিকে পাইজাম মাঝারি চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৮ টাকায়। যা এক সপ্তাহ আগে ৪৬-৫৬ টাকা আর গত বছর একই সময়ে বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৪৮ টাকায়। এ ছাড়া মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা। যা গত বছর একই সময়ে ছিল ৩৮ থেকে ৪৮ টাকা।

সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি’র হিসাবেই গত এক মাসের ব্যবধানে মিনিকেট চালের দাম বেড়েছে ৩ দশমিক ৪২ শতাংশ। আর মাঝারি চালের দাম বেড়েছে ১০ দশমিক ২ শতাংশ। এ ছাড়া মোটা চালে বেড়েছে ৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

ঢাকা রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী মো. সায়েম বলেন, চালের দাম বাড়ছেই। দুই দিনেই কেজিতে ১-২ টাকা বেড়েছে। কোরবানির ঈদের পর আরও বাড়বে বলে জানান তিনি। বলেন, চালের ব্যবসা পুরোটাই মিলাররা নিয়ন্ত্রণ করছে। আমাদের হাতে কিছু করার নেই। তারা যে রেট ধরে দেয় আড়তদাররা সেই দরেই বিক্রি করে। তাদের সিন্ডিকেটের কাছে আমরা সাধারণ ব্যবসায়ীরা অসহায়। সিন্ডিকেটকারীরা কোটি কোটি টাকা দিয়ে সব ধান একবারে কিনে গুদামজাত করে বাজারে সংকট তৈরি করছে। তারা সরকারকে বোঝাতে চায় যে, ভারত থেকে চাল আমদানি করতে হবে। তিনি বলেন, এখন ভরা মৌসুম। এমন সময় চালের দাম বাড়ছেই। যে মিনিকেট হওয়ার কথা ৫৫ ও ৫৮ টাকা। সেই চাল এখন বিক্রি করতে হচ্ছে ৬২-৬৮ টাকায়।

রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, করোনা সংকটের সময় যেখানে সবাই কম বেশি অভাবে পড়েছে। অনেকের চাকরি চলে গেছে। অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ কাজ করতে পারছে না। এমন অবস্থায় সরকারের উচিত নিত্যপণ্যের দাম কমানো। সেখানে দাম আরও বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে অনেকে বাজার করে খাওয়ার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলছে। আসলে গরিব মানুষের ব্যাপারে সরকার কোনো চিন্তা করে না। বড় লোকেরা লকডাউনে খুব ভালো আছে। তারা ঘরে বসে থেকে খেতে পারছে। কিন্তু যাদের একদিন কাজ না করলে পরের দিন পেটে ভাত জোটে না। তারা কি করবে? সে বিষয়ে আমাদের সরকার কিছু ভাবে না। যদি ভাবতো তাহলে এভাবে দফায় দফায় জিনিসপত্রের দাম বাড়তো না। চাল একটা প্রয়োজনীয় পণ্য। গরিব মানুষ একমুট ডাল-ভাত খেয়েই বাঁচে। কিন্তু সেই বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম যদি এভাবে বাড়তেই থাকে তাহলে তারা না খেয়ে মরবে।

কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান মানবজমিনকে বলেন, যেভাবে চালের দাম বাড়ছে এটা মোটেও কাঙ্ক্ষিত নয়, তবে দাম বাড়াটাও আবার মূল সমস্যা নয়। মূল সমস্যা হলো মানুষের আয় কমেছে, ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। অনেক মানুষ কাজ হারাচ্ছে। মানুষের আয় ভালো থাকলে ১-২ টাকা করে বাড়লে তেমন সমস্যা হতো না। কিন্তু দফায় দফায় বৃদ্ধি হওয়া এটাও কাঙ্ক্ষিত নয়। তিনি বলেন, এই সমস্যা সমাধানে আমার মতে তিনটি পদক্ষেপ নিতে হবে। এক. মানুষের আয় কমে যাচ্ছে, তাদের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। তাই মানুষের আয় বাড়াতে হবে। সরকারকে মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দিতে হবে। দুই. মূল্যস্ফীতি কমাতে হবে। একইসঙ্গে সরবরাহ বাড়াতে হবে। খাদ্যের ঘাটতি রাখা যাবে না। তাহলে দাম স্থিতিশীল থাকবে। এবং তিন. যদি দাম বৃদ্ধির পেছনে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট থেকে থাকে তাহলে তাদেরকে ধরে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। সিন্ডিকেটকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান করতে হবে। সরকার যদি এটা করতে পারে তাহলে এই সমস্যা আর থাকবে না। সূত্র:মানবজমিন।

ভয়েস/জেইউ।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION